সুপার স্টার, ওয়ালটন এবং ক্লিক মাল্টিপ্লাগ এর দাম

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ল্যাপটপ, মোবাইল চার্জার, টিভি, ফ্যান এবং রাউটারসহ বিভিন্ন বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি চালানোর জন্য একাধিক পাওয়ার সকেটের প্রয়োজন হয়।

কিন্তু, আমাদের বাসা বা অফিসের বিদ্যুৎ সংযোগে সকেট এর সংখ্যা সীমিত থাকায় সব ডিভাইসের চাহিদা মেটানো সবসময় সম্ভব হয় না। এই সমস্যার সমাধানে মাল্টিপ্লাগ একটি সহজ এবং কার্যকর বিকল্প হিসেবে কাজ করে, কারণ এটি ব্যবহার করে একইসঙ্গে একাধিক ডিভাইস সংযোগ করা সম্ভব হয়।

এই আর্টিকেলে আমরা মাল্টিপ্লাগ এর দাম, প্রকারভেদ এবং কেনার সময় বিবেচনাযোগ্য গুরুত্বপূর্ন বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো।

সুপার স্টার, ওয়ালটন এবং ক্লিক মাল্টিপ্লাগ এর দাম

আলোচ্য বিষয়সমূহ

মাল্টিপ্লাগ কি?

মাল্টিপ্লাগ হল একটি ইলেকট্রিক ডিভাইস, যা একটি সিঙ্গেল পাওয়ার সোর্স থেকে একাধিক ইলেকট্রিক্যাল ডিভাইস চালানোর সুযোগ দেয়।

এটি একটি সাধারণ আউটলেটকে বহুসংখ্যক আউটলেটে রূপান্তরিত করে, ফলে একই সাথে একাধিক ডিভাইস সংযুক্ত করা যায়। এটি পাওয়ার স্ট্রিপ বা এক্সটেনশন সকেট নামেও পরিচিত।

মাল্টিপ্লাগের প্রকারভেদ

মাল্টিপ্লাগ বা পাওয়ার স্ট্রিপ বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে এবং প্রতিটি প্রকারের মাল্টিপ্লাগের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা বিভিন্ন প্রয়োজন অনুযায়ী আমাদের জন্য উপযোগী হতে পারে। নিম্নে মাল্টিপ্লাগের কিছু সাধারণ প্রকারভেদ এবং তাদের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হলোঃ

  1. স্ট্যান্ডার্ড মাল্টিপ্লাগঃ এটি হলো সবচেয়ে সাধারণ ধরনের মাল্টিপ্লাগ, যেখানে সাধারণত ২-৫টি সকেট থাকে। এটি সাধারণত ছোটখাটো যন্ত্রপাতি চালানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।
  2. সার্জ প্রটেক্টেড মাল্টিপ্লাগঃ এই মাল্টিপ্লাগগুলো অতিরিক্ত বৈদ্যুতিক ভোল্টেজ থেকে ডিভাইসকে রক্ষা করতে পারে। সাধারণত, সার্জ প্রোটেক্টর যুক্ত মাল্টিপ্লাগে বিশেষ একটি সার্কিট থাকে যা অপ্রত্যাশিত ভোল্টেজ বৃদ্ধির সময় ডিভাইসকে সুরক্ষিত রাখে।
  3. ইউএসবি পোর্ট সহ মাল্টিপ্লাগঃ এই ধরনের মাল্টিপ্লাগে অতিরিক্ত ইউএসবি পোর্ট থাকে, যা ব্যবহার করে স্মার্টফোন, ট্যাবলেট বা অন্যান্য ইউএসবি চার্জিং ডিভাইস সরাসরি চার্জ করা যায়। এতে আলাদাভাবে চার্জার ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় না, ফলে এক প্লাগেই একাধিক ডিভাইস চার্জ করা সম্ভব হয়।
  4. স্মার্ট মাল্টিপ্লাগঃ এই মাল্টিপ্লাগগুলোতে ওয়াইফাই বা ব্লুটুথের মাধ্যমে সংযোগ স্থাপন করা যায় এবং স্মার্টফোন বা স্মার্ট হোম ডিভাইসের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এটি সময়সূচী অনুযায়ী ডিভাইস চালু বা বন্ধ করতে পারে, যা ঘরের বৈদ্যুতিক ডিভাইস ব্যবহারে আধুনিক সুবিধা যোগ করে।

মাল্টিপ্লাগ এর দাম

বর্তমানে বাংলাদেশে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মাল্টিপ্লাগ পাওয়া যায় যেমন— ক্লিক, সুপার স্টার, ওয়ালটন ইত্যাদি। এসব মাল্টিপ্লাগের দাম সাধারণত ৪০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। দামের এই পার্থক্য মূলত মাল্টিপ্লাগের ধরন, বৈশিষ্ট্য এবং ব্র্যান্ডের ওপর নির্ভর করে।

নিচে ক্লিক, সুপার স্টার এবং ওয়ালটন এই তিনটি ব্র্যান্ডের মাল্টিপ্লাগের দাম উল্লেখ করা হলো। মনে রাখবেন, এই দাম বাজার, সময় এবং মাল্টিপ্লাগের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে কম-বেশি হতে পারে।

ক্লিক মাল্টিপ্লাগ এর দাম

দেশের একটি জনপ্রিয় ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক পণ্য প্রস্তুতকারক ব্র্যান্ড—ক্লিক (Click)। যা প্রধানত মাল্টিপ্লাগ, এক্সটেনশন কর্ড, সার্কিট ব্রেকার, সার্জ প্রোটেক্ট এবং ফ্যানের রেগুলেটরসহ বিভিন্ন ইলেকট্রিক্যাল এক্সেসরিজ সরবরাহ করে।

সাধারণত ক্লিকের মাল্টিপ্লাগগুলো বিভিন্ন ধরনের প্লাগ পয়েন্ট ও ইউএসবি পোর্টের সমন্বয়ে গঠিত হয়, যা একইসাথে একাধিক ইলেকট্রনিক ডিভাইস সংযোগের সুবিধা দেয়।

মানসম্মত সুরক্ষা ব্যবস্থা, স্থায়িত্ব এবং কার্যক্ষমতার জন্য ক্লিক মাল্টিপ্লাগগুলো বেশ সুপরিচিত। নিচে ক্লিকের মাল্টিপ্লাগের দাম তুলে ধরা হলোঃ

মডেলতারের দৈর্ঘ্যদাম (টাকা)
ক্লিক ২-পিন, ৩-সকেট মাল্টিপ্লাগ৩ গজ৭৫৫
ক্লিক ২-পিন, ৪-সকেট মাল্টিপ্লাগ৩ গজ৮৫০
ক্লিক ২-পিন, ৫-সকেট মাল্টিপ্লাগ৫ গজ৯৫০
ক্লিক ৩-পিন, ৩-সকেট মাল্টিপ্লাগ৫ গজ১,০০৫
ক্লিক ৩-পিন, ৪-সকেট মাল্টিপ্লাগ৫ গজ১,১০৫
ক্লিক ২-পিন, ৩-সকেট, ২-ইউএসবি পোর্ট মাল্টিপ্লাগ৩ গজ১,১০৫
ক্লিক ৩-পিন, ৫-সকেট মাল্টিপ্লাগ৫ গজ১,১৯৫
Price Source: move2click

সাধারণ স্পেসিফিকেশনঃ

  • নির্ধারিত ভোল্টেজঃ ১০০-২৫০ ভোল্ট এসি ৫০/৬০ হার্টজ
  • নির্ধারিত কারেন্টঃ সর্বোচ্চ ১০ অ্যাম্পিয়ার (শুধুমাত্র ইউএসবি পোর্টযুক্ত মাল্টিপ্লাগটি ১৩ অ্যাম্পিয়ার)
  • সর্বোচ্চ লোডিং ক্ষমতাঃ ১৫০০ ওয়াট
  • ইউএসবি পোর্টের নির্ধারিত কারেন্টঃ সর্বোচ্চ ২.১ অ্যাম্পিয়ার এবং ভোল্টেজঃ ৫ ভোল্ট ডিসি।

ক্লিক মাল্টিপ্লাগের বৈশিষ্ট্যঃ

  1. তামার বার সংযোগঃ এই মাল্টিপ্লাগগুলোর ভেতরে তামার বার বা স্ট্রিপ ব্যবহার করা হয়েছে, যা উচ্চ বিদ্যুৎ পরিবহন ক্ষমতা এবং তাপ সহনশীলতা নিশ্চিত করে। এর ফলে ওভারহিটিং এর ঝুঁকি কমে যায় এবং সিস্টেমের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়।
  2. একক সুইচঃ ক্লিকের সমস্ত মাল্টিপ্লাগে প্রতিটি সকেটের জন্য আলাদা আলাদা সুইচ রয়েছে, যা দিয়ে নির্দিষ্ট ডিভাইস আলাদা ভাবে চালু বা বন্ধ করা যায়।
  3. বহুমুখী পোর্টঃ একাধিক প্লাগ পয়েন্ট ও ইউএসবি পোর্ট থাকায়, একাধিক ডিভাইস একসঙ্গে সংযোগ করা যায়।
  4. ইউনিভার্সাল সকেটঃ যেকোনো ধরনের প্লাগের জন্য ব্যবহার করা যায়। যেমনঃ টু-পিন, থ্রি-পিন, রাউন্ড বা গোলাকার পিন, ফ্ল্যাট বা চ্যাপ্টা পিন ইত্যাদি।
  5. সার্জ প্রোটেকশনঃ এতে সার্জ প্রোটেকশন থাকে, যা অতিরিক্ত ভোল্টেজ থেকে আপনার ডিভাইসগুলোকে সুরক্ষিত রাখে।
  6. নিরাপত্তা শাটারঃ ইলেকট্রিক শক থেকে বাঁচাতে এতে নিরাপত্তা শাটার রয়েছে।
  7. ওভারলোড প্রটেকশনঃ অতিরিক্ত লোড থেকে মাল্টিপ্লাগকে রক্ষা করতে ওভারলোড প্রটেকশন ফিচার রয়েছে।
  8. পোর্টেবলঃ সাধারণত হালকা ও সহজে বহনযোগ্য হওয়ায় এটি সহজেই বিভিন্ন স্থানে ব্যবহার করা যায়।

ওয়ালটন মাল্টিপ্লাগ এর দাম

বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ইলেকট্রনিক পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ওয়ালটন বিশেষভাবে পরিচিত। প্রতিষ্ঠানটি গ্যাং সুইচ, সাধারণত সুইচ এবং সকেটসহ নানা ধরণের ইলেকট্রিক্যাল অ্যাক্সেসরিজের পাশাপাশি মাল্টিপ্লাগও সরবরাহ করে।

ওয়ালটনের মাল্টিপ্লাগগুলো গুণগত মান, নিরাপত্তা এবং ব্যবহারিক সুবিধার কারণে বাংলাদেশের বাজারে বেশ জনপ্রিয়। এছাড়া, বাজারের অন্যান্য ব্র্যান্ডের তুলনায় ওয়ালটনের মাল্টিপ্লাগগুলো গুণগত মান অনুযায়ী সাশ্রয়ীও বটে।

নিচে ওয়ালটনের সমস্ত মাল্টিপ্লাগের দাম তুলে ধরা হলোঃ

ইউএসবি ছাড়া ওয়ালটন মাল্টিপ্লাগের দামঃ

মডেলতারের দৈর্ঘ্য, সুইচ সংখ্যা এবং লোডিং ক্ষমতাদাম (টাকা)
ওয়ালটন ২-পিন, ৬-সকেট মাল্টিপ্লাগ ৩ মিটার, একটি সুইচ, ১৫০০ ওয়াট৬৯০
ওয়ালটন ২-পিন, ৪-সকেট মাল্টিপ্লাগ৩ মিটার, একটি সুইচ, ১৫০০ ওয়াট৭৭৫
৩ মিটার, পৃথক সুইচ, ১৫০০ ওয়াট৮৪৫
৩ মিটার, পৃথক সুইচ, ২৫০০ ওয়াট৮৮৫
৫ মিটার, একটি সুইচ, ১৫০০ ওয়াট৯৭০
৫ মিটার, পৃথক সুইচ, ১৫০০ ওয়াট১,০৪০
৫ মিটার, একটি সুইচ, ২৫০০ ওয়াট১,০৫৫
৩ মিটার, পৃথক সুইচ, ২৫০০ ওয়াট১,০৭৫
৫ মিটার, পৃথক সুইচ, ২৫০০ ওয়াট১,২৬৫
ওয়ালটন ৩-পিন, ৪-সকেট মাল্টিপ্লাগ৩ মিটার, পৃথক সুইচ, ১৫০০ ওয়াট৯১০
৩ মিটার, একটি সুইচ, ১৫০০ ওয়াট৯১৫
৩ মিটার, একটি সুইচ, ২৫০০ ওয়াট৯৭৫
৫ মিটার, পৃথক সুইচ, ১৫০০ ওয়াট১,১০০
৩ মিটার, পৃথক সুইচ, ২৫০০ ওয়াট১,১৬০
৫ মিটার, পৃথক সুইচ, ২৫০০ ওয়াট১,৩৬০
Price Source: waltonbd

সাধারণ স্পেসিফিকেশনঃ

  • সর্বোচ্চ সাপোর্টেড ভোল্টেজঃ ২৫০ ভোল্ট এসি
  • সর্বোচ্চ লোডিং ক্ষমতাঃ ১৫০০ ওয়াট এবং ২৫০০ ওয়াট
  • ওয়ারেন্টিঃ ১ বছর

ইউএসবি পোর্ট সহ ওয়ালটন মাল্টিপ্লাগের দামঃ

মডেলতারের দৈর্ঘ্য এবং লোডিং ক্ষমতাদাম (টাকা)
ওয়ালটন ২-পিন, ৩-সকেট, ২ ইউএসবি পোর্ট মাল্টিপ্লাগ৩ মিটার, ১৫০০ ওয়াট১,৩৪৫
৫ মিটার, ১৫০০ ওয়াট১,৫৪৫
৩ মিটার, ২৫০০ ওয়াট১,৫৯০
৫ মিটার, ২৫০০ ওয়াট১,৭৫০
ওয়ালটন ৩-পিন, ৩-সকেট, ২ ইউএসবি পোর্ট মাল্টিপ্লাগ৩ মিটার, ১৫০০ ওয়াট১,৪৫০
৫ মিটার, ১৫০০ ওয়াট১,৬৩০
৩ মিটার, ২৫০০ ওয়াট১,৬৭৫
৫ মিটার, ২৫০০ ওয়াট১,৮৩০
Price Source: waltonbd

সাধারণ স্পেসিফিকেশনঃ

  • সর্বোচ্চ সাপোর্টেড ভোল্টেজঃ ২৫০ ভোল্ট এসি
  • সর্বোচ্চ লোডিং ক্ষমতাঃ ১৫০০ ওয়াট এবং ২৫০০ ওয়াট
  • ইউএসবি পোর্টের নির্ধারিত কারেন্টঃ সর্বোচ্চ ২.৪ অ্যাম্পিয়ার এবং ভোল্টেজঃ ৫ ভোল্ট ডিসি। (শুধুমাত্র উপরের টেবিলের প্রথম মডেলটির ইউএসবি আউটপুটঃ একটি ২.১ অ্যাম্পিয়ার, আরেকটি ১ অ্যাম্পিয়ার)
  • ওয়ারেন্টিঃ ৬ মাস।

ওয়ালটন মাল্টিপ্লাগের বৈশিষ্ট্যঃ

  1. বহুমুখী পোর্টঃ ওয়ালটনের মাল্টিপ্লাগগুলোতে সাধারণত একাধিক পোর্ট থাকে, যা একসাথে একাধিক ডিভাইস সংযোগের সুবিধা দেয়।
  2. ইউএসবি পোর্টঃ কিছু মডেলের মাল্টিপ্লাগে ইউএসবি পোর্ট থাকে, যা সরাসরি ইউএসবি চার্জার ছাড়াই ডিভাইস চার্জ করার সুবিধা দেয়।
  3. ইউনিভার্সাল সকেটঃ এই মাল্টিপ্লাগগুলো যেকোনো ধরনের প্লাগের সাথে কাজ করে, যেমনঃ টু-পিন, থ্রি-পিন, গোলাকার পিন, চ্যাপ্টা পিন ইত্যাদি।
  4. বিল্ড কোয়ালিটিঃ ওয়ালটনের মাল্টিপ্লাগগুলো প্লাস্টিক ও ফায়ার-রেজিস্ট্যান্ট ম্যাটেরিয়াল দিয়ে তৈরি, যা দীর্ঘস্থায়ী এবং নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করে। এ কারণে, এগুলো অনেক দিন পর্যন্ত একই কার্যকারিতা বজায় রাখে।
  5. ডিজাইনঃ ওয়ালটনের মাল্টিপ্লাগগুলো সাধারণত কম্প্যাক্ট এবং সুন্দর ডিজাইনের হয়ে থাকে, যা দেখতে অনেক আকষর্ণীয় লাগে।
  6. ওভারলোড এবং সার্জ প্রোটেকশনঃ এতে ওভারলোড এবং সার্জ প্রোটেকশন সুবিধা রয়েছে, যা বিদ্যুৎ প্রবাহের সময় অতিরিক্ত ভোল্টেজ থেকে ডিভাইসের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।
  7. নিরাপত্তা সাটারঃ এতে নিরাপত্তা শাটার রয়েছে, যা ইলেক্ট্রিক শক থেকে সুরক্ষা প্রদান করতে এবং অপ্রত্যাশিতভাবে বৈদ্যুতিক সংযোগ এড়াতে সহায়তা করে।
  8. সিলভার কন্টাক্ট সুইচঃ কিছু মাল্টিপ্লাগে প্রতিটি সকেটের জন্য আলাদা সুইচ এবং কিছুতে সব সকেটের জন্য একটি সুইচ রয়েছে। সুইচগুলোতে সিলভার কন্টাক্ট ব্যবহার করা হয়েছে, যা উচ্চ মানের বৈদ্যুতিক সংযোগ নিশ্চিত করে এবং দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর থাকে।
  9. ব্রাস বার স্ট্রাকচারঃ মাল্টিপ্লাগের অভ্যন্তরে ব্রাস বার (তামা ও দস্তার সংমিশ্রণে তৈরি একটি ধাতব বার) ব্যবহার করা হয়েছে, যা বিদ্যুৎ প্রবাহকে আরও কার্যকর এবং সমানভাবে বিতরণ করতে সহায়তা করে। এতে পাওয়ার লস কম হয় এবং নিরাপদ বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত হয়।
  10. অ্যান্টি রাস্ট স্ক্রুঃ মাল্টিপ্লাগের স্ক্রুগুলো লবণ স্প্রে পরীক্ষিত, যা তাদের মরিচা ধরা থেকে রক্ষা করে এবং দীর্ঘমেয়াদে স্থায়িত্ব নিশ্চিত করে।
  11. দীর্ঘস্থায়ী রঙঃ এসব মাল্টিপ্লাগের উপাদান এবং রঙ উচ্চমানের, যা দীর্ঘসময় ব্যবহারের পরেও অপরিবর্তিত থাকে। ফলে এর রঙ ফিকে হয় না বা বিবর্ণ হয় না, যা এর স্থায়িত্ব এবং মান বজায় রাখে।

সুপার স্টার মাল্টিপ্লাগ এর দাম

সুপার স্টার গ্রুপ (Super Star Group – SSG) বাংলাদেশে খুবই সুপরিচিত এবং জনপ্রিয় একটি কোম্পানি, যা মূলত ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহের জন্য খ্যাত।

বর্তমানে বাজারে সুপার স্টার গ্রুপের দুটি মডেলের মাল্টিপ্লাগ পাওয়া যায়, যেগুলোতে তিন থেকে পাঁচটি সকেট রয়েছে।

নিচে সুপার স্টার এর মাল্টিপ্লাগের দাম উল্লেখ করা হলোঃ

মডেলসকেট সংখ্যাদাম (টাকা)
ক্লিক ২-পিন স্মার্ট সিরিজ মাল্টিপ্লাগ৪৯৭
৫৪৮
৬০৮
ক্লিক ২-পিন এক্সট্রিম সিরিজ মাল্টিপ্লাগ৮০০
৮৮০
৪ (সাথে ২টি ইউএসবি পোর্ট)১,৩০০
৯৮০
Price Source: SSGeshop

সাধারণ স্পেসিফিকেশনঃ

  • নির্ধারিত ভোল্টেজঃ ১০০-২৫০ ভোল্ট এসি
  • নির্ধারিত কারেন্টঃ ১০ অ্যাম্পিয়ার
  • সর্বোচ্চ পাওয়ার ক্ষমতাঃ ২২০০ ওয়াট
  • ওয়ারেন্টিঃ নেই।

সুপার স্টার মাল্টিপ্লাগের বৈশিষ্ট্যঃ

  1. গুণগত মানঃ এই মাল্টিপ্লাগগুলোতে উচ্চমানের প্লাস্টিক এবং তামা ব্যবহৃত হয়, যা তাপ সহ্য করার ক্ষমতা রাখে এবং নিরাপদ ব্যবহারের নিশ্চয়তা দেয়।
  2. নিরাপত্তা ফিচারঃ সুপার স্টার মাল্টিপ্লাগগুলোতে বিল্ট-ইন সার্জ প্রটেকশন এবং ওভারলোড প্রটেকশন থাকে, যা ডিভাইসকে ভোল্টেজ স্পাইক এবং বিদ্যুতের ওভারলোড থেকে সুরক্ষা দেয়।
  3. ইউএসবি পোর্টঃ এদের একটি মডেলের মাল্টিপ্লাগে ইউএসবি পোর্টও রয়েছে যা ফোন, ট্যাবলেট এবং অন্যান্য ইউএসবি ডিভাইস চার্জ করার সুবিধা প্রদান করে।
  4. ইউনিভার্সাল সকেটঃ সকেটগুলো সকল ধরণের প্লাগের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যেমনঃ টু-পিন, থ্রি-পিন,রাউন্ড পিন,ফ্ল্যাট পিন ইত্যাদি।
  5. এলইডি সুইচঃ সুপার স্টার সুপ্রিম মডেলের মাল্টিপ্লাগটিতে এলইডি সুইচ রয়েছে, যা বিদ্যুতের সঠিক প্রবাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি সুইচটি চালু বা বন্ধ অবস্থায় রয়েছে কিনা তা আলোর মাধ্যমে বুঝতে সাহায্য করে।
  6. পোর্টেবিলিটিঃ সুপার স্টার মাল্টিপ্লাগগুলো সাধারণত হালকা ওজনের এবং পোর্টেবল, যা সহজে বিভিন্ন স্থানে বহন করা যায়।
  7. দামঃ এদের দাম বাজারের অন্যান্য ব্র্যান্ডের সাথে তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী এবং গ্রাহকদের জন্য সহজলভ্য।

মাল্টিপ্লাগ কেনার সময় বিবেচ্য বিষয়সমূহ

মাল্টিপ্লাগ কেনার সময় বেশ কিছু বিষয় বিবেচনা করা জরুরি, যাতে আপনি আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক মাল্টিপ্লাগটি বেছে নিতে পারেন। নিচে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হলোঃ

1. পোর্টের সংখ্যা ও ধরনঃ আপনার কতটি ডিভাইস মাল্টিপ্লাগে সংযুক্ত হবে তা বিবেচনা করে, উপযুক্ত পোর্টের সংখ্যা এবং ধরন (যেমন, ইউএসবি পোর্ট, তিন-পিন প্লাগ) নির্বাচন করুন।

2. লোড ক্ষমতা (ওয়াটেজ)ঃ মাল্টিপ্লাগের লোড ক্ষমতা যাচাই করুন, যা আপনার ডিভাইসগুলোর মোট পাওয়ার চাহিদার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।

3. ওভারলোড প্রোটেকশনঃ ওভারলোড প্রোটেকশন সমৃদ্ধ মাল্টিপ্লাগ নির্বাচন করুন, যা অতিরিক্ত ভোল্টেজ বা লোড থেকে আপনার ডিভাইসগুলোকে রক্ষা করবে এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাবে।

4. বিল্ড কোয়ালিটিঃ মাল্টিপ্লাগের নির্মাণশৈলী এবং ব্যবহৃত উপাদানের মান যাচাই করুন। এক্ষেত্রে টেকসই এবং তাপ সহনশীল প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি এমন মাল্টিপ্লাগ কিনুন।

5. কেবলের দৈর্ঘ্যঃ আপনার ব্যবহারের স্থান অনুযায়ী মাল্টিপ্লাগের তারের দৈর্ঘ্য নির্বাচন করুন।

6. সার্জ প্রোটেকশনঃ বিদ্যুৎ বিভ্রাট বা সার্জের সময় ডিভাইসগুলোকে সুরক্ষিত রাখতে সার্জ প্রোটেকশন যুক্ত মাল্টিপ্লাগ নির্বাচন করুন।

7. ভোল্টেজ ও ফ্রিকোয়েন্সি রেটিংঃ আপনার দেশের পাওয়ার গ্রিডের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ভোল্টেজ ও ফ্রিকোয়েন্সি রেটিং থাকা মাল্টিপ্লাগ কিনুন। বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (BPDB) এর প্রকাশিত নথি ও নীতিমালা অনুযায়ী, বাংলাদেশে পাওয়ার গ্রিডের ভোল্টেজ 230 ভোল্ট (একক ফেজ), 400 ভোল্ট (তিন ফেজ) এবং ফ্রিকোয়েন্সি ৫০ হার্জ (Hz)।

8. ব্র্যান্ড ও ওয়ারেন্টিঃ এমন ব্র্যান্ডের মাল্টিপ্লাগ নির্বাচন করুন যা দীর্ঘমেয়াদী ওয়ারেন্টি প্রদান করে এবং বাজারে ভালো রেপুটেশন আছে। ব্র্যান্ডের পরিচিতি যেমন মানের নিশ্চয়তা দেয়, তেমনি ওয়ারেন্টি সুবিধা মাল্টিপ্লাগের অতিরিক্ত সুরক্ষা নিশ্চিত করে।

9. সার্টিফিকেশন ও সেফটি স্ট্যান্ডার্ডঃ নিরাপত্তার জন্য নির্দিষ্ট মানদণ্ড পূরণ করে এমন সার্টিফাইড মাল্টিপ্লাগ কিনুন।

10. দামঃ গুণগত মান এবং দামের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে সঠিক মাল্টিপ্লাগটি নির্বাচন করুন।

উপসংহার

মাল্টিপ্লাগ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে একটি অপরিহার্য উপকরণ, বিশেষ করে বিভিন্ন ডিভাইস চার্জ করার ক্ষেত্রে। এজন্য সঠিক মাল্টিপ্লাগ নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি আপনার যন্ত্রপাতির সুরক্ষা নিশ্চিত করে এবং বিদ্যুতের অপচয় রোধ করে।

তাই মাল্টিপ্লাগ কেনার আগে অবশ্যই এর মান এবং দাম বিবেচনা করে সঠিক পণ্যটি নির্বাচন করা উচিত। আশা করি, আমাদের এই পোস্টটি আপনাকে মাল্টিপ্লাগের দাম সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে এবং উপযুক্ত মাল্টিপ্লাগ বেছে নিতে সহায়ক হবে।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQs)

সার্জ প্রোটেক্টেড মাল্টিপ্লাগ কী?

সার্জ প্রোটেক্টেড মাল্টিপ্লাগ হলো এমন একটি মাল্টিপ্লাগ, যা একাধিক বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি একসঙ্গে প্লাগ ইন করার সুবিধা দেয় এবং একই সাথে সার্জ প্রোটেকশনও প্রদান করে। সার্জ প্রোটেকশন মানে হল, হঠাৎ করে বৈদ্যুতিক ভোল্টেজ বেড়ে গেলে (যেমন বজ্রপাত, পাওয়ার সার্জ ইত্যাদি কারণে) এটি সেই অতিরিক্ত ভোল্টেজ শোষণ করে যন্ত্রপাতিগুলোকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।

মাল্টিপ্লাগের সর্বোচ্চ ভোল্টেজ ক্ষমতা কত?

মাল্টিপ্লাগের সর্বোচ্চ ভোল্টেজ ক্ষমতা নির্ভর করে মাল্টিপ্লাগের ডিজাইন, মান এবং উৎপাদনকারীর উপর। সাধারণত, বেশিরভাগ মাল্টিপ্লাগ 220V থেকে 250V পর্যন্ত ভোল্টেজ সহ্য করতে সক্ষম। তবে এটি নিশ্চিত হওয়ার জন্য মাল্টিপ্লাগের প্যাকেজিং বা গায়ে উল্লেখিত তথ্যগুলো চেক করা উচিত।

মাল্টিপ্লাগে কি ওভারলোড হতে পারে?

হ্যাঁ, মাল্টিপ্লাগে যদি একাধিক উচ্চ ক্ষমতার ডিভাইস একসাথে প্লাগ করা হয় তবে ওভারলোড হতে পারে।

মাল্টিপ্লাগ কি অতিরিক্ত বিদ্যুৎ খরচ করে?

না, মাল্টিপ্লাগ নিজে কোনো বিদ্যুৎ খরচ করে না। এটি শুধুমাত্র একাধিক ডিভাইসকে একটি পাওয়ার আউটলেট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্য ব্যবহৃত হয়। মাল্টিপ্লাগে সংযুক্ত ডিভাইসগুলো যদি চালু অবস্থায় থাকে, তাহলে সেগুলো বিদ্যুৎ খরচ করবে। তবে মাল্টিপ্লাগের নিজস্ব বিদ্যুৎ খরচ নেই।

মাল্টিপ্লাগ কি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী?

না, মাল্টিপ্লাগ নিজে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে না। কারণ এটি শুধুমাত্র বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।

মাল্টিপ্লাগে একাধিক হাই-ওয়াটেজ ডিভাইস ব্যবহার করা কি নিরাপদ?

মাল্টিপ্লাগে একাধিক হাই-ওয়াটেজ ডিভাইস ব্যবহার করা সাধারণত নিরাপদ নয়। মাল্টিপ্লাগের একটি নির্দিষ্ট ক্ষমতা থাকে এবং আপনি যদি সেই ক্ষমতা অতিক্রম করেন, তাহলে এটি ওভারলোড হতে পারে যা শর্ট সার্কিট, ফায়ার বা অন্যান্য দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।

মাল্টিপ্লাগ গরম হয় কেন?

মাল্টিপ্লাগে অতিরিক্ত লোড, হাই-ওয়াটেজ ডিভাইস সংযুক্ত করা, দীর্ঘক্ষণ ব্যবহার এবং নিম্নমানের মাল্টিপ্লাগ ব্যবহারের কারণে গরম হতে পারে।


Share on:

This is the founder of BDtechio.com. As a passionate student and blogger with nearly two years of experience, I specialize in writing insightful articles on technical tips and information. I strive to share knowledge and assist in digital navigation.

Related Article

Leave a Comment